রবিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৪

বাড়ির দুর্দশায় মালিকের অবহেলাই দায়ি


একটা বিল্ডিং ডিজাইনে যে
পরিমাণ ফ্যাক্টর অফ
সেফটি ধরা হয়,
তাতে তা কলাপ্স করার
সম্ভাবনাই থাকে না।
কিন্তু তারপরেও
এতো বিল্ডিং কেন
ধসে পড়ছে????
এবার আসুন দেখি ফ্যাক্টর অফ
সেফটি গুলো কিভাবে আসছে
----- ----- ----- ----- -----
১) সয়েল টেস্ট রিপোর্টের
মাটির
বিয়ারিং কেপাসিটিতে ২-৩ পর্যন্ত ফ্যাক্টর অফ সেফটি ধরা থাকে।
২) লোড কম্বিনেশনে ডেড
লোড আর লাইভ
লোডে যথাক্রমে ১.২ ও ১.৬
ফ্যাক্টর অফ সেফটি ধরা থাকে।
৩) ঝড় তুফান আর ভূমিকম্পের
সাথে সর্বোচ্চ লাইভ লোড
পাবার সম্ভাবনাও খুবই কম, তাই
লোড কম্বিনেশনেও
একটা সুবিধা পাওয়া যায়।
৪) মোমেন্ট হিসাবেও
একটা ফ্যাক্টর অফ সেফটি ধরা থাকে।
৫) ভালো ডিজাইনাররা
ডিজাইনে ঢালাইয়ের
স্ট্রেন্থ ২৫০০ পিএসআই ধরলেও
বাস্তবে ৩০০০ পিএসআই কনক্রিট
স্ট্রেন্থের সাজেস্ট করেন।
৬) অনেক ডিজাইনার আবার
কলাম/বিম ডিজাইনে যা রড
আসে তারচেয়ে একটা বা দুটা রড
বেশি দেন।তাহলে বলেন, বিল্ডিং কেন
ধসে??????
এখন আসেন দেখি, পাবলিকের
পইতালি কিভাবে একটা
বিল্ডিং ডিজাইনকে দুর্বল
করে--------
১)মালিকের পইতালি—
যদি ডিজাইনে পাইল দেন,
তাহলে হুদাই ঘ্যানর ঘ্যানর
করবে এই বলে, “ ভাই
পাইলটা কি কুনো ভাবেই বাদ
দেয়া যায় না???”
আপনে যদি “না” করেন
তাহলে জমির মালিক
অতি জ্ঞানী হইলে আপনারে
এভয়েড করে কিছু কিছু ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার আছে, তাদের
দিয়া থাম্ব রুলে পাইল বাদ
দিয়ে বিল্ডিং বানাবে।
আপনে বিল্ডিং এর বিম/কলামে যে রড যে কয়টা দিতে বলবেন,
সে পাশের বাড়ির কলামের
রডের সাথে তুলনা করে তার
চেয়ে কম রড দিবে। আর
সাথে তো তত্ত্বাবধায়ক
উপদেষ্টা মি. রাজমিস্ত্রি
ওরফে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার
তো আছেই।
মালিক আর রাজমিস্ত্রির
এহেন মাদবুরি উপরের বর্ণিত
১,২,৩,৪ আর ৬ নং ফ্যাক্টর অফ
সেফটিকে দুর্বল করে ফেলবে।
সাধারণত সিমেন্টের গুনাগুণ
সর্বোচ্চ দুই মাস পর্যন্ত
মোটামোটি ভালো থাকতে
পারে,
যদি আপনে তা ভালো করে
সংরক্ষণ করতে পারেন। কিন্তু
অধিকাংশ সময়ে ডেম
সিমেন্ট দিয়েই
অনেকে ঢালাই করে। এটা ৫
নং ফ্যাক্টর অফ সেফটিকে দুর্বল
করে ফেলবে।
২)মি রাজমিস্ত্রি ওরফে সিভিল
ইঞ্জিনিয়ারের পইতালি
এদের টলটলা ঢালাই
মসলা না হলে মন ভরে না, তাই
ঢালাইয়ের বন্ধু কাম শত্রু
অতিরিক্ত
পানি দিয়ে মসলা মিশাবে
যা ৫ নং ফ্যাক্টর অফ
সেফটিকে দুর্বল করে ফেলবে।
ডিজাইনারের
অবর্তমানে অতি আগ্রহে জমির
মালিকের টাকা সেইভ করার
জন্য বিভিন্ন সময় রডের
ডিজাইন চেঞ্জ
করবে এবং সিমেন্ট কম দিবে।
কিন্তু ঢালাইয়ের
মালটা ভালো করে মিশাবে
না কিংবা কাস্টিং করার
সময় ভালো করে কম্পেক্ট
করবে না। এতে করে ফ্যাক্টর
অফ সেফটিগুলো আবার দুর্বল
হবে।
আবার আপনে ডিজাইন
করাবেন কমার্শিয়াল
বিল্ডিং কিন্তু
সেখানে ভাড়া দিবেন
ফ্যাক্টরি,
কিংবা ডিজাইনারকে বলবেন
৬ তালা করবেন কিন্তু
বাস্তবে করবেন ৯ তালা,
সেক্ষেত্রে আপনার
অতি মুনাফা লোভ
সবগুলা ফ্যাক্টর অফ
সেফটিগুলো খেয়ে ফেলবে।
সুতরাং বুঝতেই পারতাছেন
আপনাদের
উস্তাদি প্রতি ধাপে ধাপে
কিভাবে ফ্যাক্টর অফ
সেফটিগুলো
খেয়ে ফেলে।
যার কাজ তাকে করতে দিন
এবং দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার
দিয়ে বিল্ডিং বানান।

আদর্শ ইটের গুণাবলি



১. একটি আদর্শ ইটের সাইজ হলো= ২৫৪
মিমি X ১২৭ মিমি X ৭৬ মিমি
২. প্রতি বর্গমিটার ফ্ল্যাট সলিং-এ ইট
লাগে = ৩১ টি
৩. প্রতি ঘনমিটার
গাঁথুনীতে লাগে = ৪১০ টি
৪. প্রতি ঘনমিটার
খোয়া তৈরিতে লাগে = ৩২০ টি
৫. প্রতি বর্গমিটার হেরিং বোন
বন্ডে লাগে = ৫৬ টি
৬. প্রতি মিটার এন্ড এজিং-এ
লাগে = ১৩ টি

যদি ফুট,
সি.এফ.টি হিসেবে হিসাব
করতে চাই, তাহলে
১. একটি আদর্শ ইটের সাইজ হলো= ৯.৫
ইঞ্চি X ৪.৫ ইঞ্চি X ২.৭৫ ইঞ্চি
২. প্রতি বর্গফুট ফ্ল্যাট সলিং-এ ইট
লাগে = ৩ টি
৩. প্রতি ঘনফুট গাঁথুনীতে লাগে = ১২টি
৪. প্রতি ঘনফুট
খোয়া তৈরিতে লাগে = ৯ টি
৫. প্রতি বর্গফুট হেরিং বোন
বন্ডে লাগে = ৬ টি
৬. প্রতি ফুট এন্ড এজিং-এ লাগে = ৪টি

মাইন্ড স্টিলের সম্পর্কে


মাইল্ড স্টীল:
এর গায়ে কোন ক্র্যাক
থাকবে না
মরিচা থাকবে না
ওজন প্রতি ঘনমিটারে ৭৮৫০
কেজি এর কম হবে না
একে ৯০
ডিগ্রি বাঁকিয়ে আবার
সোজা করলে এর কোন
প্রভাব পড়বে না বা ক্র্যাক
তৈরি হবে না

ইটের প্রাথমিক কথা


ইট বা ব্রিকস:
রং সুন্দর হবে এবং খুব
ভালভাবে সমভাবে পুড়তে
হবে
উপরিভাগে কোন ক্র্যাক
থাকতে পারবে না
একই ধরণের সাইজ ও আকার
হতে হবে
ধারগুলি সার্প
বা ধারালো বা সুন্দর
হতে হবে
দুইটা ইট পরষ্পরের
সাথে বাড়ি দিলে টংটং
শব্দ দিবে
ভাঙা ইটের পার্শ্বে কোন
ছিদ্র থাকবে না। উজ্জ্বল
হবে এবং রং বাইরের মতই
হবে
কোনকিছু দিয়ে আচড়
দিলে আচড় পড়বে না
প্রতি ঘণমিটারে ওজন ১৮৫৬
কেজির কম হবে না
পানি শোষণ ক্ষমতা ২০% এর
বেশি হবে না
এক মিটার
উচ্চতা থেকে শক্ত কোন
কিছুর উপর
ফেলে দিলে ভেঙে যাবে
না
পানিতে ২৪
ঘন্টা চুবিয়ে রেখে তারপর
উঠিয়ে কোন ছায়ার
মধ্যে শুকাতে দিলে এর
গায়ে লবনাক্ততা বা সাদা
ছাপ ভেসে উঠবে না।

চলুন বালুকে জানি ( Sand)



কোন জিবাস্ম মিশ্রিত
থাকবে না
অন্যান্য অপ্রযোজনীয়
কোনকিছু মিশ্রন থাকবে না
হাতের মুঠে কিছু
বালি নিয়ে মুঠের
মধ্যে নাড়াতে হবে। এবার
মুঠ
খুলে বালি ফেলে দিতে
হবে।
যদি হাতে ময়লা লেগে
থাকে তাহলে বুঝতে হবে
সেটা ভাল বালি না
গ্লাসের মধ্যে কিছু
পানি দিয়ে তার
মধ্যে বালি মেশাতে হবে।
এবার কিছুক্ষন
রেখে দিতে হবে।
যদি কিছুক্ষন পার
বালি তলানিতে যায়
এবং পানির
উপরিভাগে কোন
ময়লা না থাকে,
তাহলে বুঝতে হবে বালি
ভাল।
পানি যদি ঘোলা থাকে
তাহলে বুঝতে হবে কাদা
বা অন্য কিছু আছে,
এবং সেটা ভাল বালি না।

সিমেন্ট নিয়ে কিছু কথা

সিমেন্ট:
ভাল সিমেন্টের রং সবুজাভ
গ্রে হবে
এর মধ্যে কোন শক্ত পিন্ড
থাকবে না, অন্য কোন কিছু
মেশানো থাকবে না
ব্যাগের মধ্যে হাত
দিলে ঠান্ডা অনুভব হবে
সামান্য পরিমান সিমেন্ট
নিয়ে পানি ভর্তি বালতির
পাণির উপর
ছেড়ে দিলে কিছুক্ষন
পানির উপর সিমেন্ট
থাকবে। ছিটানোর
সাথে সাথেই
নিচে পড়ে যাবে না
দুই আঙ্গুলের মধ্যে সিমেন্ট
নিয়ে আঙ্গুল
ঘষতে খষখসে হবে না,
পিচ্ছিল হবে।
প্রতি ঘণমিটারে ওজন ১৪৪০
কেজির কম হবে না।
ইনিশিয়াল
সেটিং বা সাধারণ জমাট
বাধার সময় ৪৫ মিনিটের কম
হবে না। শক্ত বা কঠিন হওয়ার
সময় ১০ ঘন্টার বেশি হবে না
স্টোন চিপস বা পাথর
নন-প্লাস্টিক হবে। অর্থাৎ
একে চ্যাপটা বা টেনে
লম্বা করা যাবে না
অর্গানিক বা অন্যান্য
বাহিরের কোনকিছু মিশ্রণ
থাকবে না
ভাল গ্রেডের হতে হবে
প্রতি ঘনমিটারে ওজন ১৬১০
কেজির কম হতে পারবে না
৩% এর
বেশি ময়লা হতে পারবে
না









শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৪

ইটের গুনোগত মান পরিক্ষা ( ল্যাবরেটরি এবং মাঠ টেষ্ট)


কনস্ট্রাকশন
কাজে ইটের ব্যবহার বহুল। তাই
ভাল ইটের বৈশিষ্ট্য যেমন
জানা দরকার। তেমনি দরকার
ইটের পরীক্ষার বিষয়ে কিছু।
আজকে আমার জ্ঞানের
সীমাবদ্ধতার
মধ্যে থেকে কয়েকটি পরীক্ষার
বিষয়ে বলবো

1. ক্র্যাশিং স্ট্রেন্থ :
এটা দিয়ে ইটের কম্প্রেসিভ
স্ট্রেন্থ বা চাপ সহ্য
ক্ষমতা নির্ণয় করা হয়। এর জন্য
পাঁচটি ইট স্যাম্পল
হিসাবে নেওয়া হয়। এরপর
এটিকে ক্র্যাশং মেশিনে
দিয়ে , মেশিনের
মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করা হয়।
ইটের ভেঙ্গে যেত সেই বল
প্রয়োজন হয়। সেই বল রেকর্ড
করা হয়। এই ভাবে পাঁচটি ইটের
শক্তি পরীক্ষা করা হয়। এর পর এই
পাঁচটি ইটের কম্প্রেসিভ
স্ট্রেন্থ এর গড় নেয়া হয়, এবং এই
গড়!।
 মানই হলো ইটের কম্প্রেসিভ
স্ট্রেন্থ।

 2. ইফ্লোরেসেন্স টেষ্ট:
এ্যালকেলির পরিমাণ বা লবণ
পরীক্ষা করা হয় এর মাধ্যমে।
লবন কনস্ট্রাকশন কাজের জন্য খুবই
ক্ষতিকর। বাতাসের
আদ্রতা থেকে পানি নিয়ে,
লবন ইটের বাইরে চলে আসে।
এর সার্ফেস বা তল
সাদাটে হয়ে যায়। এই
পরীক্ষার জন্য কয়েকটি ইটকে 24
ঘন্টা পানিতে চুবিয়ে রাখা
হয়। তারপর এই
ইটকে ছায়াতে শুকাতে হয়।
শুকানোর পর যদি ইটের
তলাতে সাদা সাদা ভেসে
ওঠে তাহলে বুঝতে হবে লবন
আছে। তলের 10% পর্যন্ত
সাদা হলে সেই ইট ব্যবহার
করা যেতে পারে। এর
বেশি হলে ব্যবহার না করাই
ভাল।

3. পানি শোষন ক্ষমতা: 
ইট কতটুকু
পানি শোষন করে সেটাও
জানা জরুরী। খুব
বেশি পানি শোষণ করলে সেই
ভাল না। এর জন্য
প্রথমে শুকনা ইটের ওজন
নেয়া হয়। তারপর এই
ইটকে পানিতে 24
ঘন্টা চুবিয়ে রাখতে হয়।
পাণি থেকে ইট ওঠানোর পর
আর উপরিভাগ
ভালভাবে কাপড়
দিয়ে মুছে ওজন নিতে হবে।
ভেজা ইটের ওজন
থেকে শুকনা ইটের ওজন
বিয়োগ করলে ইটের শোষিত
পাণির ওজন পাওয়া যাবে।
শোষিত পাণির ওজন
এবং শুকনা ইটের ওজনের
অনুতাপ 0.20 এর
বেশি হতে পারবে না। অর্থাৎ
ইটের পাণি শেষণ ক্ষমতা 20%
পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য।

4. হার্ডনেস পরীক্ষা:
 নখবা একটু শক্ত কোনকিছু
দিয়ে সাধারণ বল
প্রয়োগে যদি কোন দাগ
ফেলানো না যায়
তাহলে বুঝতে হবে ইট ভাল।

5. সাউন্ড বা শব্দ :
 এতে দুইটি ইট
পরষ্পরকে ঠোকা দিয়ে দেখতে
হবে। যদি শব্দটা টক-টক
বা তীক্ষ্ণ শব্দ দেয়
তাহলে ইটের গুণাগুণ ভাল
বলে বিবেচিত হবে। আর
যদি শব্দ ঢ্যাপ ঢ্যাপ
বা ফাপাফাপ শব্দ দেয়
তাহলে বঝতে হবে ইট তত ভাল
না।

6.স্ট্রাকচার :
ইটকে ভাংলে যদি এর
মধ্যে কোন ছিদ্র না তাকে,
যদি পাতলা ভাবে চলটা না
ওঠে, যদি ভেতরের রং সুন্দর
থাকে , তাহলে বুঝতে হবে ইট
ভাল

123123